সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ , ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় : আইএসপিআর মসজিদে ঢুকে নামাজরত ভাইকে হত্যা চৌধুরী মনসুর আহমদ স্মরণে শোকসভা, তিনি মানবিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন ষড়যন্ত্র রুখতে মাঠে থাকবে যুবদল টাঙ্গুয়ার হাওর নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ ভিডিও পোস্ট, প্রতিবাদে থানায় জিডি দোয়ারাবাজারে গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের দাবি জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল তাহিরপুরে অগ্নিকান্ডে তিনটি দোকান পুড়ে ছাই এনসিপি’র সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ নাব্যতা হারাচ্ছে খাসিয়ামারা নদী দ্রুত খননের দাবি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে গোপালগঞ্জ ছাড়েন সারজিস-হাসনাতরা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে দেশসেরা সুনামগঞ্জ গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা “রাজাকারদের উৎখাতে স্বেচ্ছাসেবক দলই যথেষ্ট” ১০ মাসে ৩৫৫৪ খুন, ৪১০৫ ধর্ষণ, ৮১৯ অপহরণ আজ রাষ্ট্রীয় শোক শহরে জামায়াতের প্রচার মিছিল রেমিট্যান্স যোদ্ধা থেকে সফল উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম লক্ষ্য একটাই, ২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন : মির্জা ফখরুল মাদকসহ গ্রেফতারের পর জামিনে এসে প্রতিবাদকারীর বিরুদ্ধে মামলা!

নদীর প্রাণ ফিরে এলে, হাওরের জীবনও বাঁচবে

  • আপলোড সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ১২:৪৮:০১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ১২:৪৮:০১ পূর্বাহ্ন
নদীর প্রাণ ফিরে এলে, হাওরের জীবনও বাঁচবে
দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা নদীর নাব্যতা হারানোর চিত্রটি শুধু একটি নির্দিষ্ট এলাকার নয়, বরং এটি গোটা হাওরাঞ্চলের নদ-নদী ব্যবস্থার বিপন্নতার একটি উদাহরণ। খাসিয়ামারা নদীর ওপর কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবারড্যাম আজ অকার্যকর হয়ে পড়ছে শুধুমাত্র অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে। পলি ও বালির টেক জমে থাকায় এই নদী এখন মৃতপ্রায়। এ থেকে হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর ভবিষ্যৎ আঁচ করা যায়। সুনামগঞ্জের জীবন-জীবিকা, কৃষি ও পরিবেশ নির্ভর করে সুরমা, রক্তি, যাদুকাটা, বৌলাইসহ অসংখ্য নদী-খালের উপর। হাওরের প্রাণ হচ্ছে এসব নদীর প্রবাহ। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দীর্ঘদিন ধরে কোনো পরিকল্পিত ড্রেজিং না হওয়ায় এসব নদীও এখন দিনদিন মৃতপ্রায় হয়ে উঠছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ বন্ধ থাকে, আবার বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই হাওর তলিয়ে যায়, আগাম বন্যায় ফসলহানির ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। ফলে একদিকে কৃষকের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে হাওরের সার্বিক পরিবেশগত ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এক সময় হাওরাঞ্চলের নদ-নদী ছিল প্রবহমান, কৃষকের মাঠে পানি পৌঁছাত সহজেই, বর্ষাকালে তা আবার দ্রুত নিষ্কাশন হতো। কিন্তু এখন খনন না হওয়ায় নদীগুলোতে স্থায়ীভাবে পলি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে, রাবারড্যামসহ অন্যান্য অবকাঠামো কার্যকারিতা হারাচ্ছে। আমরা মনে করি, নদী খনন কেবল কৃষকের জন্য পানির সংস্থান নয়, এটি হাওরের অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি মৌলিক কাজ। এখন সময় এসেছে, নদ-নদী খননকে একটি জরুরি জাতীয় কর্মসূচি হিসেবে ঘোষণা করার। প্রতি বছর যে বাজেট কৃষি উন্নয়ন কিংবা বন্যা প্রতিরোধে ব্যয় হয়, তার একটি অংশ নিয়মিত নদী খননের জন্য বরাদ্দ করা জরুরি। জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বিত উদ্যোগে সুনামগঞ্জের নদীগুলোর জরুরি ভিত্তিতে একটি ড্রেজিং মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। আমরা দেখেছি, খাসিয়ামারা নদীর মতো ছোট নদীগুলোর উপরও হাজার হাজার কৃষক নির্ভরশীল। অথচ একটি নদী খননের অভাবে কোটি টাকার অবকাঠামো যেমন রাবারড্যাম অকেজো হয়ে পড়ছে, তেমনি কৃষক বঞ্চিত হচ্ছে সেচের পানির সুবিধা থেকে। এ অবস্থা চলতে থাকলে শুধু কৃষি নয়, হাওরের সামগ্রিক ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিকল্পনা বিভাগকে অনুরোধ জানাই- হাওরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর খনন প্রকল্প দ্রুত হাতে নিন। শুধু কাগজে-কলমে নয়, মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান কাজ দেখতে চায় হাওরের মানুষ। নদীর প্রাণ ফিরে এলে, হাওরের জীবনও বাঁচবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স